মহাসচিব, সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশ।
চেয়ারম্যান, নিউরোলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ।
এ রোগ ব্রেন সেল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে হয়। এটি এমন একটি রোগ, যা সম্পূর্ণ সেরে যাওয়ার নয়। ওষুধ দিয়ে কমিয়ে রাখা যায়। চিকিৎসার দুটি পার্ট আছে। যেমন ফার্মাকোলজি ও নন–ফার্মাকোলজি পার্ট। ফার্মাকোলজি পার্টে অনেক ওষুধ আছে। শুরুতেই যদি রোগ নির্ণয় করে এর চিকিৎসা করা যায়, তাহলে রোগী অনেক দিন ভালো থাকতে পারেন। বিশ্ব পারকিনসন দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ জনগণকে এ রোগ সম্পর্কে সচেতন করা। রোগ সম্পর্কে জেনে যদি তাঁরা শুরুতেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেন, তাহলে তাঁরা দীর্ঘদিন সুস্থ থাকবেন। এ রোগে প্রথমে রোগীদের ওষুধে চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোগীর অবস্থা যদি খুব খারাপ হয়, তখন অপারেশন করানো হয়। নন–ফার্মাকোলজি পার্ট–এ আমরা অর্ধেক ফিজিওথেরাপি দিয়ে থাকি। এ রোগের ক্ষেত্রে থেরাপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রাথমিকভাবে খুব অলস হয়ে থাকেন। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে চান না। নড়াচড়া করতে চান না। সারাক্ষণ ঝিমাতে চান, রেস্ট নিতে চান। এ রোগীরা যত অ্যাকটিভ থাকবেন, তত সুস্থ থাকবেন। এ বিষয়ে তাঁদের মোটিভেট করতে হবে। রোগীকে মস্তিষ্কের কাজ বাড়াতে হবে। অলস হওয়া যাবে না। অলস হলে এই রোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। বিদেশে এ ধরনের রোগীদের পাজেল খেলতে দেওয়া হয়। ওষুধে যতটুটু কাজ হয়, থেরাপিতে ঠিক সমপরিমাণ কাজ হয়। রোগীদের উচিত নিয়মিত সাঁতার কাটা ও নাচ করা। এগুলো ফিজিওথেরাপিতে খুব ভালো কাজে দেয়। সর্বশেষ পরামর্শ হবে সার্জিক্যাল চিকিৎসা দেওয়া। সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একজন প্রফেসর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে যোগ দিয়েছেন, যার অধীনে আমরা একটি টিম কাজ করছি। আমাদের দেশে নিউরোসার্জারির কতগুলো কাজ সফলভাবে সম্পূর্ণ করেছি। ভবিষ্যতে আমাদের দেশের নিউরোলজিস্টরাই এককভাবে কাজগুলো করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করি। সে ক্ষেত্রে আমাদের পারকিনসন রোগীরা অনেক উপকৃত হবেন। পারকিনসন্স রোগ প্রতিরোধে পরিবারের সাপোর্ট একটা বড় বিষয়। রোগী, চিকিৎসক ও পরিবার—এই তিন পক্ষ যদি সচেতন হয়ে একসঙ্গে সাপোর্ট দিতে পারে, তাহলে রোগী দীর্ঘদিন ভালো থাকতে পারবেন।